অনলাইন সোনারগাঁও.কমঃ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের তিলচন্দী বাজার ফার্ণিচার ব্যবসার জন্য এক নামে পরিচিত। এখানকার তৈরী নানা প্রকার ফার্ণিচার সামগ্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারী ও খূচরা বিক্রি হয়। কিন্তু করোনার কারণে দেশের অন্যান্য ব্যবসার মত ফার্ণিচার ব্যবসায় ও দেখা দিয়েছে মন্দা ভাব।
অত্যন্ত সু পরিচিত তিলচন্দী বাজারে প্রায় ২-৩ শ ফার্ণিচারের দোকান রয়েছে। এ সমস্ত দোকান গুলোতে কাঠের তৈরী চেয়ার, টেবিল, খাট, পাল্কং, শোকেস, আলমারী, ওয়ারড্রপ, ড্রেসিংটেবিল, দরজার পাট, সোফাসেট ইত্যাদী তৈরী ও বিক্রি হয়ে থাকে। দোকানীরা দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা থেকে ট্রাক যোগে বড় বড় গাছ কেটে এনে সে গুলো “স” মিলে কেটে ছেঁটে এ সমস্ত ফার্ণিচার সামগ্রী তৈরী করে বিক্রি করে থাকে।
এখানকার ফার্ণিচার সামগ্রী খুব মজবুত, টিকসই, সুন্দর ও দামী হয়ে থাকে। একটি খাটের মূল্য ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফার্ণিচার তৈরীতে ব্যবহৃত কাঠ গুলো হচ্ছে শাল, সেগুন, লোহা কাঠ, কেরোসিন কাঠ, একাশিয়া কাঠ, মেহগনি, বেলজিয়াম কাঠ ইত্যাদী। তৈরী করা ফার্ণিচার সামগ্রী গুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারীতে বিক্রি হয়ে থাকে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌখীন লোকজন এসে এখানে ফরমায়েশ দিয়ে ফার্ণিচার সামগ্রী তৈরী করিয়ে থাকেন। একেকটি দোকানের ফার্ণিচার সামগ্রী দৈনিক কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকতো। কিন্তু করোনার কারণে এখানকার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পে ও ব্যবসায় মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে।
এখন আর ঐ সমস্ত ফার্ণিচার লোকজন খুব একটা কিনতে আসেন না। তিলচন্দী বাজারের ফার্ণিচার ব্যবসায়ি আবুল হোসেন আক্ষেপ করে জানান, এতদিন দোকানে খরিদ্দার জায়গা দেওয়ার মত অবস্থা ছিলনা। একজনের পর একজন খরিদ্দার এসে ভীর জমিয়ে ফার্ণিচার কিনতো। কিন্তু করোনার কারণে দেশের সব ব্যবসার মত এ ব্যবসায় ও মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। সাড়া দিন দোকানে বসে মাছি মারার মত অবস্থা হয়েছে।
অপর ব্যবসায়ি কামাল হোসেন জানান, ব্যবসায় এতই মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে যে, কর্মচারী খাটানোই দায় হয়ে পড়েছে। তৈরী মাল বিক্রি হচ্ছে না। মাল বিক্রি না হলে নতুন মাল তৈরী করার প্রয়োজন পড়ে না। তাই কর্মচারীদেরকে বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হয়। তিলচন্দী বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি হায়দার আলী বলেন, বাজারটি ফার্ণিচার ব্যবসার জন্য দেশের সর্বত্র পরিচিত। কিন্তু ব্যবসাটি এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। ২-৩ শ দোকানের কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
Post a Comment