সোনারগাঁওয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

অনলাইন সোনারগাঁও.কমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসন ও সোনারগাঁও উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে সোনারগাঁও পৌরসভার চিলারবাগ এলাকায় বিজয় স্তম্ভে প্রদীপ প্রজ্বলন ও আলোচনা সভার মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে।


সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম, খন্দকার তবিদুর রহমান (ওসি তদন্ত) উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম ইমাম, সাধারণ সম্পাদক গোলজার হোসেন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক শওকত ওসমান সরকার রিপন, সোনারগাঁও উদীচি শিল্পটির সভাপতি শংকর প্রকাশ সহ উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ। 

উল্লেখ্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দু'দিন আগে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলায় বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় বুদ্ধিজীবীদের নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও বা অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছিল অনেকেরই। বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে এসব বুদ্ধিজীবী নিজেদের মেধা, মনন ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। দেখিয়েছেন মুক্তির পথ। গোটা জাতিকেও উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ের সংগ্রামে।

১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবীদের নিধনযজ্ঞের শিকারের দিন হিসেবে স্মরণ করা হলেও মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই ইতিহাসের এ ঘৃণ্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এদের তালিকায় একে একে উঠে আসে অসংখ্য বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। 

পরে কৃতী এসব বুদ্ধিজীবীর তালিকাই তুলে দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ক্যাডার গ্রুপ কুখ্যাত আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে। নেপথ্যে ছিল পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা রাও ফরমান আলী। মূলত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে গুলি ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা শুরু হয়। আর এ অপকর্মের চূড়ান্ত নীলনকশারই বাস্তবায়ন ঘটে ১৪ ডিসেম্বর। তার পর থেকে ১৪ ডিসেম্বর দেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন হয়ে আসছে।