অনলাইন সোনারগাঁ.কমঃ নারায়ণগঞ্জ -৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা সাংবাদিক ও জাতীয় পার্টি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকালে "আমার স্বপ্নের সোনারগাঁ, স্বপ্নের সুন্দরতম আধুনিক সোনারগাঁ গড়ে তোলাই ছিল আমার কর্ম "র আলোকে, সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা কাঁচাবাজার সংলগ্ন ঈশা খাঁ টুরিস্ট হোমে এই মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ইফতারের পূর্বে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
বক্তব্যে তিনি ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এমপি থাকাকালীন সময়ে সোনারগাঁ বাসীর উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার দীর্ঘদিনের রাজনীতির চলার পথে জনগণের সেবক হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গণে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছি। তাই আমি ১০টি বছর ধর্ম, বর্ণ, দল মত এর ঊর্ধ্বে থেকে সোনারগাঁয়ের ভালো মানুষদের আমার কর্ম ও ভালোবাসার মাঝে সকলকে একত্রিত করার চেষ্টা করেছি এবং তাদের সাথে নিয়ে সোনারগাঁয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ও সোনারগাঁবাসীকে শান্তিতে রাখতে পেরেছি। বিগত ১০টি বছর সংসদ সদস্য দায়িত্ব পালনকালে সোনারগাঁয়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবি, মসজিদ-মাদ্রাসার ঈমাম, ওলামায়কেরামগণ, কোমলমতি আমার প্রিয় ভাগিনা-ভাগনি, ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিক, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ক্রীড়ামোদী সংগঠন, করোনাযোদ্ধা, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, তাঁতি, জেলে, সরকারি কর্মচারী, দর্জি, গাড়ী চালক, হকারস, দিনমজুর, (রিকশা, ভ্যান, সিএজি চালক), পরিবহন শ্রমিক, দোকানদার শ্রমিকসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি বলে আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
সকল লোভ লালসা ত্যাগ করে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে সোনারগাঁবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণায় সোনারগাঁবাসীদের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আমাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ যুগিয়েছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালীন আমার সাথে আপনাদের যে আন্তরিকতার সেতুবন্ধন ছিল আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক অঙ্গনের শেষ সময় পর্যন্ত আপনাদের জন্য আমার দ্বার সবসময় উন্মুক্ত থাকবে। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্দ্য বিষয় হচ্ছে আমি গত ১০ বছর সোনারগাঁবাসীর জন্য কি কাজ করেছি তার একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরা এবং যেসব কাজ করার আন্তরিক ইচ্ছা ছিল বা শুরু করেও শেষ করতে পারিনি তারই একটি চিত্র আপনাদের কাছে উপস্থাপন করা।
প্রিয় সাংবাদিক দিক বৃন্দ, করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘ ৩ মাস নিজের জীবন বাজি রেখে সোনারগাঁয়ের প্রতিটি অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে গভীর রাত পর্যন্ত খাবার পৌঁছে দিয়েছিলাম। আমার একমাত্র কন্যা সন্তান যাকে বুকে জরিয়ে আদর না করলে ঘুমাত না, আমি যখন অনেক রাতে বাড়ি ফিরতাম তখন দূর থেকে শুধু হাত নাড়িয়ে তাকে আদর করতাম তবুও সোনারগাঁবাসীর কাছ থেকে দূরে সরে যাইনি। সোনারগাঁয়ে সর্বপ্রথম আমি ঘোষণা করেছিলাম কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না। তারই ধারাবাহিকতায় করোনা মহামারিকালীন সময়ে আমি, আমার নেতাকর্মী ও আমার গঠিত করোনাযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকা প্রস্তুত করে ৪০ হাজার পরিবারের মাঝে খাবার, মাকস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্রাবস, ব্লিচিং পাউডার, পাঁচ শতাধিক স্প্রে মেশিন, মধ্য বিত্তদের জন্য হট লাইন সেবার মাধ্যমে খাবার সরবারাহ ও করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য ৪টি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দিয়েছিলাম। করোনা আক্রান্ত রোগিদের সরকারিভাবে লকডাউন করে দেওয়া করোনা আক্রান্ত পরিবার ও আশেপাশের লকডাউন করে দেওয়া সকল বাড়িতে খাবার ও প্রয়োজনীয় ঔষধ পৌঁছে দিয়েছিলাম। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরে আপনজনও লাশের সামনে যেতে ভয় পেত।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমার প্রিয় সোনারগাঁয়ের ৫৮ জন মানুষ মারা যায়। আমি ও আমার গঠিত সেচ্ছাসেবী করোনাযোদ্ধা টিমের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিদের ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক দাফন কাফন করার যে তৌফিক আল্লাহ আমাকে দিয়েছে তার জন্য রাব্বুল আল- আমিনের এর কাছে শুকরিয়া। করোনাকালীন সময়ে কৃষকদের ধান কাটার জন্য কমভাইন্ড হারভেস্ট মেশিন ভাড়া করে দিয়েছিলাম ও আমার নেতাকর্মীরা দরিদ্র কৃষকদের ধান কাটার কাজে সহযোগিতা করেছিল।
আমি নির্বাচিত হওয়ার পর আমার প্রতিশ্রুতি ছিল সোনারগাঁয়ে কোন বাশের সাকোঁ থাকবে না। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পর থেকে যে সেতুগুলো মানুষের স্বপ্ন ছিল আমি তা বাস্তবায়ন করেছি বলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। গত ১০ বছরে বহু বাশের সাঁকোর স্থলে নির্মিত হয়েছে ব্রিজ। বহুল কাঙ্খিত, দীর্ঘদিনের মানুষের স্বপ্নের ঐতিহাসিক হরিহরদী, মান্দারপাড়া, রতনপুর, ভাটিবন্দর, চৌরাপাড়া, কাজীপাড়া, প্রেমের বাজার, হামছাদী, আনন্দ বাজার, আমবাগ, বাংলা বাজার ও পঞ্চমীঘাট এলাকায় জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে সেতু নির্মাণসহ সোনারগাঁয়ে প্রায় ছোট বড় ৮০টি সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি।
বিভিন্ন ইউনিয়নে একাকী সিএনজি করে ঘুরে ঘুরে দেখেছি সোনারগাঁয়ের রাস্তাগুলো ছিল খুবই ভাঙ্গা ও অপ্রশস্ত এবং নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ করা খুব প্রয়োজন ছিল। গ্রামীন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়নের সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করেছি। আমি নিজস্ব ও সরকারি অর্থায়নে বরাব, আদমপুর, বঙ্গবন্ধু সড়কসহ ওয়ার্ড ভিত্তিক সকল রাস্তা প্রশস্ত করেছিলাম। তাছাড়া এলজিইডির জনগুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তা ইতিমধ্য ভিত্তিপ্রস্তর ও উদ্ধোধন করেছি।
রাস্তাগুলো হলো, রতন মার্কেট হতে ওয়াপদা বেড়ীবাধ ভায়া দবির উদ্দিন ভূঁইয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পাকা করন এর কাজ চলমান। জৈনপুর হতে ছয়হিস্যা ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদ হইতে রতনপুর হয়ে ভবনাথপুর পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত করন সহ পাকা করন এর কাজ চলমান। শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদ হতে বটতলা হয়ে মোগরাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তসহ পাকা করা হয়েছে। বারদী আশ্রম সংলগ্ন ব্রিজ হইতে বিষ্ণাদী, ধন্দী বাজার হয়ে মাঝের চর স্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তসহ পাকা করা হয়েছে। সাত ভাইয়াপাড়া পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ হতে বৈদ্যের বাজার বটতলা পর্যন্ত রাস্তা সিসি করা হয়েছে। গোয়ালপাড়া হতে চেঙ্গাকান্দী পর্যন্ত রাস্তা পাকা করা হয়েছে। কাইকারটেক বাজার হতে রামগোবিন্দেরগাঁও পর্যন্ত রাস্তা আর সিসি করা হয়েছে। কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজ সংলগ্ন বিজয় স্তম্ভ হতে আদমপুর বাজার পর্যন্ত রাস্তা আর.সি.সি সহ শত শত রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল খুবই জরাজীর্ন, ভাঙ্গা, চেয়ার টেবিল সংকট ও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষারমান সন্তোষজনক ছিল না। আমি বিগত ১০ বছরে ৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি। এছাড়া গজারিয়াপাড়া, কাইকারটেক, কালিগঞ্জ ও ভটেরকান্দি সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ অতিদ্রুত সম্পন্ন হবে। সোনারগাঁয়ে কোন সরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল না। আমার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজ ও মোগরাপাড়া এইচ জি.জি.এস স্মৃতি বিদ্যায়তনকে সরকারি করেছি। সোনারগাঁয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও এমপিওভূক্ত মাদ্রাসাসহ ৪২টি ভবনের উদ্ধমুখী ও নিম্নমুখী নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি। সোনারগাঁয়ে সকল বিদ্যালয়ে শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ওয়াশব্লক নির্মাণ করেছি। প্রায় ৬৫টি বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৫০টি শহীদ মিনার নির্মাণ, ৩০টি স্কুলের মাঠে মাটি ভরাট, সকল বিদ্যালয়ে গভীর নলকূপ স্থাপন এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করেছি। এছাড়া নোয়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, চর কিশোরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি।
আমি ধন্ধী বাজারে চার তলা ভীত বিশিষ্ট দ্বিতলা আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করেছি। বিভিন্ন বাজারে কমিউনিটি টয়লেট নির্মাণ, বাজারের গলির রাস্তা পাকা করণ, বাজারের সেড নির্মাণ, বাজারের মাঠ ভরাটসহ নানাবিধ উন্নয়ন করেছি।
সোনারগাঁয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বসার জন্য কোন কার্যালয় ছিল না। মুক্তিযোদ্ধাদের বসার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর জন্য আবেদন করি কিন্তু জমি না থাকায় প্রকল্প আটকে যায়। পরে আমি মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সক্ষমতার কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতীকি মূল্যে খাস জমি বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য আবেদন করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১০০১ টাকা প্রতীকি মূল্যে জমি বরাদ্ধ প্রদান করেন ও সোনাগাঁ পৌরসভার সাহাপুর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করি। সনমান্দী ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং সেন্টার এর স্মৃতি রক্ষার্থে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ, সোনারগাঁও পৌরসভায় চিলারবাগে বিজয় স্তম্ভ নির্মাণ, বীর নিবাস নির্মাণ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা অফিস নির্মাণ ও মেরামত করেছিলাম।
বারদী ইউনিয়নের মেঘনা নদী বেষ্টিত যোগাযোগ বিছিন্ন নুনেরটেক দ্বীপটিতে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ঘরে ঘরে শতভাগ বিদুৎ সংযোগ প্রদান করেছি। নুনেরটেক ডিয়ারা হতে লালপুরি পর্যন্ত গাইড ওয়াল নির্মাণ, নুনেরটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, টেকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবণ নির্মাণ করেছি, নুনেরটেক সেসিপ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫লাখ টাকা নিজস্ব অর্থায়নে মাঠ ভরাট, বেঞ্চ বিতরন, ইলেকট্রিক সামগ্রীসহ ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল থেকে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেছিলাম। নুনেরটেক টেকপাড়া এলাকায় কালভটি নির্মাণসহ স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, নতুন নতুন মাটির রাস্তা, গভীর নলকূপ, দারিদ্র বিমোচন, গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক গতি সঞ্চার হয়েছে। নুনেরটেক দ্বীপ রক্ষার্থে রিংবাধ প্রকল্পের জন্য ডিও প্রদান করেছি।
বৈধভাবে শতভাগ গ্যাস সংযোগের সদয় অনুমোদন প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে আবেদন করেছি। আশা করি, জাতির জনকের সুযোগ্য কণ্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অচিরেই সোনারগাঁয়ে শতভাগ বৈধ গ্যাস সংযোগ প্রকল্প অনুমোদন প্রদান করবেন।
উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, উপজেলা সম্প্রাসারিত প্রশাসনিক ভবন, অডিটোরিয়াম, বঙ্গবন্ধু মুরাল, পানির ফোয়ারা, থিমপার্ক, টিপরদী এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, উপজেলা প্রেস ক্লাব ভবন নির্মাণসহ লাঙ্গলবন্দ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুন্যস্নানের স্থান উন্নয়ন কাজ, জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর এলাকায় ৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, সহস্রাধিক মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, ঈদগাহ উন্নয়ন, ৮০টি কবরস্থানে লাশ ঘর নির্মাণ, ২ হাজার এর অধিক স্ট্রীট লাইট, সোলার প্যানেল স্থাপন, বিশুদ্ধ পানি সরবারহ, শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ, সকলের সহযোগিতায় সমাজে শান্তি-শৃংখলা টিকিয়ে রাখা, মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজী ইভটিজিং প্রতিরোধসহ নানাবিধ উন্নয়নমূলক ও সামাজিক কর্মকান্ড সম্পাদন করেছি । স্বাধীনতা পরবর্তী সোনারগাঁবাসীর বহুল কাঙ্খিত দীর্ঘদিনের দাবীগুলো বাস্তবায়ন করেছি। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও একসময়ের অবহেলিত জনপদ হিসেবে পরিচিত সোনারগাঁ আজ শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে, যা আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সোনারগাঁবাসীর সহেযাগিতার ফসল।
সোনারগাঁয়ে খেলাধুলার উপযোগি তেমন কোন স্টেডিয়াম ছিলনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্টেডিয়ামটি ব্যাটারি কোম্পানীর দখলে ও খেলাধুলার অনুপযোগি ডোবা ছিল। আমি নিজে সোনারগাঁয়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, ক্রীড়ামোদী খেলোয়ারদের সাথে নিয়ে মানববন্ধন এর মাধ্যমে মাঠ দখলমুক্ত করে উদ্বোধন করি। সোনারগাঁয়ে খেলাধুলার উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্টেডিয়ামটি বিভিন্ন বরাদ্দের মাধ্যমে ও নিজস্ব অর্থায়নে খেলার উপযোগি করে গড়ে তুলেছি। ১১ কোটি টাকার অধিক বাজেট বরাদ্দ স্বাপেক্ষে এটি বর্তমানে শহীদ শেখ রাসেল স্টেডিয়াম প্রকল্পে অন্তরর্ভূক্ত রয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করণ ও নতুন ভবন নির্মাণ করেছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ভিতরের রাস্তাটি প্রশস্তসহ আর সিসি করেছি। নিজস্ব অর্থায়ণে আমার সহধর্মিনী ডালিয়া লিয়াকত করোনা টেষ্টিং বুথ ও ইসিজি মেশিন প্রদান করেছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া অংশে মারিখালি ব্রিজের উভয় পার্শ্বে ইউলুপ নির্মাণ সম্পন্ন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দড়িকান্দী অংশে লাঙ্গবন্ধ ব্রীজের নিচ দিয়ে ইউলুপ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর নয়াবাড়ি ও ছোট সাদিপুর এলাকায় ইউটার্ন নির্মান কাজ চলামান রয়েছে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ অংশে পথচারীদের জন্য ৫টি নতুন ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করেছিলাম।
ব্রহ্মপুত্র নদ পুনঃখনন, মেঘনা নদীর শাখা রাহান্দী খাল পুনঃখনন ও অলিপুরা হইতে সাজালেরকান্দী এলাকায় খাল খননের কাজ চলমান
সোনারগাঁও পৌর এলাকায় ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানি সরবারাহের জন্য ৩টি ওভার হেডট্যাংক স্থাপন করেছি। এছাড়া প্রতাপের চর, লাধুর চর, মোগরাপাড়া বাজার সংলগ্ন, গঙ্গাপুর বাজারে, সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পানি সরবারহের জন্য গ্রামীণ পাইপ ওয়াটার স্কীম (ওভার হেড ট্যাংক) স্থাপন করা হয়েছে।
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণ, বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষুদ্র মেরামত করেছি।
আপনারা আরো জেনে খুশি হবেন, অতিব জরুরী কিছু রাস্তা কাজ চলামান, টেন্ডার সম্পন্ন, কার্যাদেশ প্রদান ও ডিও প্রদান করেছি।
রাজাগুলো হলো, মিরেরটেক বাজার হতে জামপুর ইউপি অফিস ভায়া মুছার চর-শেখেরহাট পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের টেন্ডার সম্পন্ন, কাঁচপুর হতে নয়াপুর ভায়া গঙ্গাপুর বাজার সড়ক প্রশস্তসহ মজবুতি করণের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, গোবিন্দপুর হতে বুরুমদী রাস্তা পাকা করণের টেন্ডার সম্পন্ন, বারদী-আনন্দবাজার পাকা সড়ক হতে ফুলদী বাগেরপাড়া ভায়া হাশেম চেয়ারম্যানের বাড়ি (বঙ্গবন্ধু সড়ক) পাকা করণের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, গৌরবরদী পাকা রাস্তা হতে শেখদিয়াপাড়া পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের টেন্ডার সম্পন্ন, চরকিশোরগঞ্জ ফেরিঘাট-চরহোগলা আশ্রায়ন প্রকল্পে ভায়া আর এন্ড এইচ রাস্তা পাকা করনের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, চৌত্রাপাশা হইতে ওয়াপধা বেড়ীবাধ পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, দৌলরদী-নাকুরিয়াহাটি (ছটাকিয়া) রাস্তা পাকা করণের ডিও প্রদান করেছি, বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদ হতে কালু সরকার এর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের ডিও প্রদান করেছি, তালিমাবাদ হইতে বস্তুল সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ললাটি সুখেরটেক মদনপুর সড়কের কাজ চলমান, বারদী শান্তিরবাজার পাকা রাস্তা হতে আলগীরচর সড়ক ভায়া বাবু চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, কাঁচপুর চেঙ্গাইন সড়কের ডিও প্রদান করা হয়েছে, গিয়াসউদ্দিন আযম শাহ মাজার রাস্তা হতে কাইকারটেক পাকা রাস্তা ভায়া শাহচিলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা সময়ান্তর রক্ষনাবেক্ষন এর ডিও প্রদান করা হয়েছে, ডেমরা-নরসিংদী আর এইচ ডি বরপা মাঝের চর ভায়া পাকুন্ডা বরপা তালতলা মাঝেরচর রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান, মিরেরটেক বাজার-জামপুর ইউপি অফিস সড়ক মেরামত ও সময়ান্তর রক্ষনাবেক্ষনের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, ললাটি-কুশার-দামারগোলা সড়ক মেরামত ও সময়ান্তর রক্ষনাবেক্ষনের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে, শম্ভুপুরা ইউপি অফিস (নবীনগর) হতে শম্ভুপুরা সড়ক মেরামত ও সময়ান্তর রক্ষনাবেক্ষনের কাজ চলমান, সনমান্দী ইউপি অফিস- কাইকারটেক বাজার ভায়া দড়িকান্দি সোনাখালী পাঁচপীরদরগা রাস্তা উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, পিরোজপুর ইউপি অফিস হতে বৈদ্যের বাজার ভায়া রতনপুর ভাটিবন্দর সড়ক মেরামত ও সময়ান্তর রক্ষনাবেক্ষনের কাজ চলমান, বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদ হতে হামছাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত করণ সহ আরসিসি করন কাজের টেন্ডার সম্পন্ন। এছাড়া একান্ত প্রয়োজনীয় সকল রাস্তা বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ডিও পত্রের মাধ্যমে আবেদন করেছি। কর্তৃপক্ষ সচেতন হলে অতি দ্রুত এই প্রকল্পগুলি সম্পন্ন হবে। কাজগুলো বাস্তবায়ন হলে আমার সোনারগাঁয়ের জনগণ সুখে থাকবে। সোনারগাঁবাসী ভালো থাকলে আমি ভালো থাকবো।
ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের দিঘী চাঁদপুর এলাকায় "সোনারগাঁ সরকারি কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ" নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী করণ ও এমপিও ভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছি। আরো ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের জন্য ডিও প্রদান করেছি। কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজ, সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের জন্য ডিও প্রদান করেছি। এছাড়া মেঘনা শিল্প নগরী স্কুল, তাহেরপুর হাজী লাল মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং কাইকারটেক নবাব হাবিবুল্লাহ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আনন্দ বাজার, কাইকারটেক বাজার, বারদী বাজার, অলিপুরা বাজার, গঙ্গাপুর বাজার, পঞ্চমীঘাট বাজার, মহজমপুর বাজার ও বটতলা বাজার এ আধুনিক মাকের্ট নির্মানের কাজ জন্য ডিও প্রদান করেছি।
মেঘনা নদীর শাখা মারিখালি খাল (বৈদ্যের বাজার হইতে কাইকারটেক পর্যন্ত) সহ ৫ টি খাল খননের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
সোনারগাঁয়ে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল, অর্থনৈতিক জোন ও শিল্পপার্ক স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলা পরিষদ এর মাধ্যমে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে লাধুর চরে ১টি আধুনিক শশ্মান নির্মাণ অনুমোদন হয়েছে পাশাপাশি স্থায়ী মন্দিরগুলোতে সেড নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। কাঁচপুর, মোগরাপাড়া, জামপুর, নোয়াগাঁও, বারদীতে জমি অধিকগ্রহণ পূর্বক নতুন ইউনিয়ন পরিষদ এর ভবন নির্মাণের জন্য ডিও প্রদান করেছি। প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনারগাঁও পৌর এলাকায় মানব বজ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প পুনরায় টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন।
সোনারগাঁয়ের উন্নয়নে জনগনের চাহিদা মাফিক বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ডিও লেটার প্রদান করেছি। আমার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সোনারগাঁয়ে যোগাযোগ খাতে উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মতো। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে মানুষের জীবন যাত্রার মানও বেড়েছে, কমেছে দুর্ভোগ।
অবকাঠামোগত এসব উন্নয়ণের পাশাপাশি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নিয়েছি নানা পদক্ষেপ। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের আমি কখনই প্রশ্রয় দেইনি। সোনারগাঁয়ের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য অবিরাম কাজ করে আমার কর্মের প্রেরণা হিসেবে পেয়েছি সোনারগাঁয়ের মাটি ও মানুষের ভালোবাসা। উন্নয়ন কাজে আমাকে আন্তরিক সহযোগিতা করায় আপনাদের ভালোবাসার ঋণ আমি কখনও শোধ করতে পারবো না। হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, উত্থান-পতন নিয়েই মানুষের জীবন।
আমি বিগত ১০ বছর যে কাজ করেছি নির্বাচনকালীন সময়ে আপনারা যে ভালবাসা, দোয়া দিয়েছেন তাতে আমি তৃপ্ত, চিরকৃতজ্ঞ। প্রিয় সোনারগাঁয়ের উন্নয়নের স্বপ্ন পূরণের মিশন থেকে আমি কখনোই দূরে সরে যাবো না। সোনারগাঁবাসীর ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সবাই নিরাপদ থাকবেন। কারও সঙ্গে বিবাদে জড়াবেন না। সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান সেবক হিসেবে আমৃত্যু নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি।
সোনারগাঁ আমার আপনার সকলের। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমার নেতাকর্মী এবং প্রিয় সোনারগাঁবাসীর পাশে থাকবো, ইনশা'আল্লাহ। আমি যত জীবন বাঁচব সোনারগাঁবাসীর কল্যাণে এমনভাবে কাজ করে যেতে চাই যে, আমার মৃত্যুর পর সোনারগাঁবাসী আমাকে হারানোর বেদনায় কাঁদে।
Post a Comment